ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের যত্ন নেওয়ার সহজ পদ্ধতি
ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের যত্ন নিতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন, ত্বকে মধু ও দইয়ের মিশ্রণ মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করুন, এবং নিয়মিত শসার রস লাগান। প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ত্বককে ময়েশ্চারাইজ ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
প্রাকৃতিক এবং ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া সহজ, সাশ্রয়ী এবং প্রায়শই কার্যকরী। আমাদের রান্নাঘরে থাকা সাধারণ উপাদানগুলো ব্যবহার করে ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখা সম্ভব। নিয়মিত ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করলে ত্বক স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল ও কোমল হয়। এখানে কিছু সহজ ঘরোয়া পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো, যা ত্বকের যত্নে সহায়ক হতে পারে।
ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য ঘরোয়া উপায়ে তিনটি সহজ পদ্ধতি হলো:
মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগান, এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ এবং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
দই ও বেসনের প্যাক ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন, এটি ত্বক পরিষ্কার ও মসৃণ করে।
শসার রস ত্বকে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন, এটি ত্বকের ক্ল
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায়
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার জন্য কিছু সহজ এবং কার্যকর উপায় রয়েছে। এখানে কিছু পরামর্শ দেওয়া হল।
লেবু ও মধুর মিশ্রণ: লেবুতে প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান থাকে যা ত্বকের রং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। 1 টেবিল চামচ লেবুর রস ও 1 টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগান। 15-20 মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে 2-3 বার ব্যবহার করতে পারেন।
দই ও হলুদ প্যাক: দই ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং হলুদ প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক হিসাবে কাজ করে। 2 টেবিল চামচ দই ও 1 চিমটি হলুদ মিশিয়ে মুখে লাগান। 15 মিনিট পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
শসার রস: শসার রস ত্বককে শীতল করে এবং উজ্জ্বলতা এনে দেয়। শসার রস মুখে লাগিয়ে 20 মিনিট রেখে দিন, তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ডিমের সাদা অংশ: ডিমের সাদা অংশ ত্বকের টানটানভাব বাড়ায় এবং উজ্জ্বলতা আনে। ডিমের সাদা অংশ ভালো করে ফেটে মুখে লাগিয়ে 15-20 মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন।
আলুর রস: আলুর রসে প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান থাকে যা ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। আলুর রস মুখে লাগিয়ে 15 মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন।
বেসন ও দুধ প্যাক: 2 টেবিল চামচ বেসন ও 1 টেবিল চামচ দুধ মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে 20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
মুলতানি মাটি ও গোলাপজল: মুলতানি মাটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় এবং ত্বক উজ্জ্বল করে। 2 টেবিল চামচ মুলতানি মাটি ও প্রয়োজনমতো গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। মুখে লাগিয়ে 15-20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এই উপাদানগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে, ত্বক সংবেদনশীল হলে প্রথমে অল্প পরিমাণে পরীক্ষা করে নেয়া উচিত। এছাড়া, সুস্থ ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা, সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিদিনের ত্বকের যত্ন:-প্রতিদিনের ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য কিছু সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত। এখানে প্রতিদিনের ত্বকের যত্নের একটি সম্পূর্ণ গাইড দেওয়া হলো:
সকালে মুখ ধোয়া:একটি জেন্টল ক্লিনজার ব্যবহার করুন যা ত্বক থেকে ময়লা ও তেল দূর করে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লিনজার বেছে নিন (শুষ্ক, তৈলাক্ত, মিশ্র, বা সংবেদনশীল ত্বক)।
টোনার:টোনার ত্বকের pH ব্যালেন্স রক্ষায় সাহায্য করে এবং পোরগুলোকে সংকুচিত করে। একটি অ্যালকোহল মুক্ত টোনার ব্যবহার করুন।
ময়েশ্চারাইজার:ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। শুষ্ক ত্বকের জন্য ভারী ময়েশ্চারাইজার এবং তৈলাক্ত ত্বকের জন্য লাইটওয়েট ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন।
সানস্ক্রিন:সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করার জন্য SPF 30 বা তার বেশি যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
রাতে মেকআপ রিমুভাল:দিনের শেষে মেকআপ ত্বক থেকে মুছে ফেলুন। একটি ভালো মেকআপ রিমুভার বা মাইসেলার ওয়াটার ব্যবহার করতে পারেন।
ক্লিনজিং:আবার ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
এক্সফোলিয়েশন (সপ্তাহে 2-3 বার):ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সপ্তাহে 2-3 বার একটি জেন্টল স্ক্রাব ব্যবহার করুন। এক্সফোলিয়েশন ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে।
টোনার:টোনার প্রয়োগ করুন।
সিরাম:আপনার ত্বকের প্রয়োজন অনুযায়ী একটি উপযুক্ত সিরাম ব্যবহার করুন। যেমন ভিটামিন সি সিরাম ত্বক উজ্জ্বল করে, হাইলুরোনিক অ্যাসিড সিরাম ত্বককে হাইড্রেট করে।
সাপ্তাহিক যত্ন:
ফেস মাস্ক:সপ্তাহে 1-2 বার একটি ফেস মাস্ক ব্যবহার করুন যা আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী হবে। যেমন, শুষ্ক ত্বকের জন্য হাইড্রেটিং মাস্ক, তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ক্লে মাস্ক।
আই ক্রিম:চোখের চারপাশের ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য একটি ভালো আই ক্রিম ব্যবহার করুন।
পর্যাপ্ত ঘুম:প্রতিদিন 7-8 ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট:স্ট্রেস কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম, মেডিটেশন বা যোগ ব্যায়াম করুন।
এই প্রতিদিনের ত্বকের যত্নের রুটিন অনুসরণ করলে ত্বক স্বাস্থ্যকর ও উজ্জ্বল থাকবে।
তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন:-তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নিতে কিছু বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত যা ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। এখানে তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের জন্য কিছু কার্যকরী টিপস দেওয়া হলো।
প্রতিদিনের যত্ন:
মুখ ধোয়া:দিনে দুবার (সকালে এবং রাতে) একটি অয়েল-কন্ট্রোলিং ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন যা ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল এবং ময়লা দূর করে। সালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারঅক্সাইডযুক্ত ক্লিনজার ভালো কাজ করে।
টোনার:অ্যালকোহল মুক্ত টোনার ব্যবহার করুন যা ত্বকের pH ব্যালেন্স রক্ষায় সাহায্য করে এবং পোরগুলোকে সংকুচিত করে। হ্যাজেল বা টি ট্রি অয়েলযুক্ত টোনার ভালো কাজ করে।
ময়েশ্চারাইজার:লাইটওয়েট, অয়েল-ফ্রি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন যা ত্বককে হাইড্রেট করে কিন্তু ত্বকের পোর বন্ধ করে না।
সানস্ক্রিন:অয়েল-ফ্রি, ম্যাটিফাইং সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন যাতে SPF 30 বা তার বেশি থাকে। এটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
সাপ্তাহিক যত্ন:এক্সফোলিয়েশন:সপ্তাহে 2-3 বার একটি জেন্টল স্ক্রাব ব্যবহার করুন যা ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং পোরগুলো পরিষ্কার রাখে।
ফেস মাস্ক:সপ্তাহে ১-২ বার ক্লে মাস্ক ব্যবহার করুন যা ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় এবং পোরগুলো পরিষ্কার রাখে।
অতিরিক্ত যত্ন:
ব্লটিং পেপার:দিনের মধ্যে ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হলে ব্লটিং পেপার ব্যবহার করে ত্বকের তেল শুষে নিতে পারেন।
নন-কমেডোজেনিক প্রসাধনী:মেকআপ বা স্কিনকেয়ার পণ্য বেছে নেওয়ার সময় নন-কমেডোজেনিক লেবেল খুঁজুন যা পোর বন্ধ করবে না।
প্রাকৃতিক পদ্ধতি:
অ্যালোভেরা জেল:অ্যালোভেরা জেল প্রাকৃতিকভাবে ত্বক শীতল করে এবং ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ করে। এটি মুখে লাগিয়ে রাতে রেখে দিতে পারেন।
টি ট্রি অয়েল:টি ট্রি অয়েল ত্বকের ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। একটি কটন বাডে কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল নিয়ে ব্রণের উপর প্রয়োগ করতে পারেন।
লেবুর রস:লেবুর রসে প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট উপাদান থাকে যা ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। লেবুর রস ও পানি মিশিয়ে ত্বকে প্রয়োগ করুন,10 মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন।
মুলতানি মাটি:মুলতানি মাটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। মুলতানি মাটি ও গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং মুখে লাগিয়ে 15-20 মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন:
পর্যাপ্ত পানি পান:প্রতিদিন 8-10 গ্লাস পানি পান করুন যাতে ত্বক হাইড্রেটেড থাকে।
সুষম খাদ্য গ্রহণ:চর্বিযুক্ত এবং ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন। তাজা ফল, সবজি, প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন।
স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট:স্ট্রেস কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম, যোগ বা মেডিটেশন করুন।
এই পরামর্শগুলো অনুসরণ করলে ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল থাকবে।
সকালে ত্বকের যত্ন:-সকালে ত্বকের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ত্বককে দিনের বাকি সময়ের জন্য প্রস্তুত করে। এখানে সকালের ত্বকের যত্নের একটি ধাপ-ধাপ নির্দেশিকা দেওয়া হলো:
1. মুখ ধোয়া:সকালে ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে একটি জেন্টল ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এটি ত্বক থেকে রাতের সিবাম (তেল) এবং ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লিনজার বেছে নিন।
2. টোনার:মুখ ধোয়ার পরে একটি অ্যালকোহল মুক্ত টোনার ব্যবহার করুন। টোনার ত্বকের pH ব্যালেন্স রক্ষায় সাহায্য করে এবং পোরগুলো সংকুচিত করে। এটি ত্বককে সতেজ করে এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলোর জন্য প্রস্তুত করে।
3. সিরাম:সিরাম উচ্চ মাত্রায় সক্রিয় উপাদান থাকে যা ত্বকের সমস্যা সমাধানে কার্যকর। যেমন:ভিটামিন সি সিরাম: ত্বক উজ্জ্বল করতে এবং সূর্যের ক্ষতির বিরুদ্ধে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
হাইলুরোনিক অ্যাসিড সিরাম: ত্বক হাইড্রেট করে এবং ফাইন লাইনের লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে।
4. আই ক্রিম:চোখের চারপাশের ত্বক অনেক সংবেদনশীল, তাই একটি ভালো আই ক্রিম ব্যবহার করুন যা চোখের ফোলা ও ডার্ক সার্কেল কমাতে সাহায্য করে।
5. ময়েশ্চারাইজার:ময়েশ্চারাইজার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী লাইটওয়েট বা হেভি ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন।
6. সানস্ক্রিন:এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। একটি অয়েল-ফ্রি, ব্রড-স্পেকট্রাম সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন যাতে SPF ৩০ বা তার বেশি থাকে। এটি সূর্যের ক্ষতিকর UVA এবং UVB রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
7. মেকআপ (যদি প্রয়োজন হয়):যদি মেকআপ ব্যবহার করেন, তবে নন-কমেডোজেনিক মেকআপ পণ্য ব্যবহার করুন যাতে ত্বকের পোরগুলো বন্ধ না হয়ে যায়।
শীতকালে ঘরোয়া উপায়ে ত্বক পরিষ্কার করার উপায়:
শীতকালে ত্বক পরিষ্কার রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সময়ে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। ত্বক পরিষ্কার রাখার জন্য ঘরোয়া কিছু উপায় নিচে উল্লেখ করা হলো:
1. দুধ ও মধু ক্লিনজার
উপাদান: 2 টেবিল চামচ কাঁচা দুধ, 1 টেবিল চামচ মধু
পদ্ধতি: দুধ ও মধু মিশিয়ে মুখে লাগান। 5-10 মিনিট রেখে আলতো করে ম্যাসাজ করুন, তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দুধ ত্বক পরিষ্কার করে এবং মধু ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে।
2. ওটমিল ও মধু স্ক্রাব
উপাদান: 2 টেবিল চামচ ওটমিল, 1 টেবিল চামচ মধু
পদ্ধতি: ওটমিল ও মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে 5 মিনিট ধরে আলতো করে ম্যাসাজ করুন, তারপর 10 মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ওটমিল ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং মধু ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে।
3. নারকেল তেল ও চিনি স্ক্রাব
উপাদান:1 টেবিল চামচ নারকেল তেল, 1 টেবিল চামচ চিনি
পদ্ধতি: নারকেল তেল ও চিনি মিশিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করুন, তারপর গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নারকেল তেল ত্বককে হাইড্রেট করে এবং চিনি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে।
4. বেসন ও দই প্যাক
উপাদান: 2 টেবিল চামচ বেসন, 1 টেবিল চামচ দই
পদ্ধতি: বেসন ও দই মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে 15-20 মিনিট রেখে দিন, তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। বেসন ত্বক পরিষ্কার করে এবং দই ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে।
5. শসা ও দই ক্লিনজার
উপাদান:1 টেবিল চামচ শসার রস, 1 টেবিল চামচ দই
পদ্ধতি: শসার রস ও দই মিশিয়ে মুখে লাগান। 15 মিনিট পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। শসার রস ত্বককে শীতল করে এবং দই ত্বককে হাইড্রেট করে।
6. অ্যাভোকাডো ও মধু মাস্ক
উপাদান: 1-2 পাকা অ্যাভোকাডো,1 টেবিল চামচ মধু
পদ্ধতি: অ্যাভোকাডো চটকে মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে 15-20 মিনিট রেখে দিন, তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অ্যাভোকাডো ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং মধু ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে।
অতিরিক্ত টিপস:
পর্যাপ্ত পানি পান করুন: শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, তাই পর্যাপ্ত পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন: শীতকালে প্রতিদিন একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন যা ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে।
লিপ বাম ব্যবহার করুন: ঠোঁট শুষ্ক ও ফাটা রোধ করতে লিপ বাম ব্যবহার করুন।
নিয়মিত পরিষ্কার করুন: ত্বক শুষ্ক হওয়ার কারণে মৃত কোষ জমে যেতে পারে, তাই নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার রাখা জরুরি।
এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো শীতকালে ত্বককে পরিষ্কার, স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করবে।
ব্রণযুক্ত ত্বকের যত্ন:-ব্রণযুক্ত ত্বকের যত্ন নিতে কিছু বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত যাতে ত্বক সুস্থ ও পরিষ্কার থাকে। এখানে কিছু কার্যকরী টিপস দেওয়া হলো:
প্রতিদিনের যত্ন:
মুখ ধোয়া:দিনে দুবার (সকালে এবং রাতে) একটি অয়েল-কন্ট্রোলিং ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন যা স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারঅক্সাইডযুক্ত হতে পারে। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল এবং ময়লা দূর করে।
টোনার:অ্যালকোহল-মুক্ত টোনার ব্যবহার করুন যা ত্বকের pH ব্যালেন্স রক্ষায় সাহায্য করে এবং পোরগুলো সংকুচিত করে। উইচ হ্যাজেল বা টি ট্রি অয়েলযুক্ত টোনার ভালো কাজ করে।
ময়েশ্চারাইজার:একটি হালকা, অয়েল-ফ্রি, নন-কমেডোজেনিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন যাতে ত্বক আর্দ্র থাকে কিন্তু তেল বৃদ্ধি না পায়।
সানস্ক্রিন:ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করার জন্য একটি ব্রড-স্পেকট্রাম, অয়েল-ফ্রি সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন যাতে SPF 30 বা তার বেশি থাকে।
সাপ্তাহিক যত্ন:
এক্সফোলিয়েশন:সপ্তাহে 1-2 বার একটি জেন্টল এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব ব্যবহার করুন যা ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং পোরগুলো পরিষ্কার রাখে। গ্লাইকোলিক অ্যাসিড বা ল্যাকটিক অ্যাসিড যুক্ত স্ক্রাব ভালো কাজ করে।
মাস্ক:সপ্তাহে 1-2 বার ক্লে বা চারকোল মাস্ক ব্যবহার করুন যা ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় এবং পোরগুলো পরিষ্কার রাখে।
প্রাকৃতিক পদ্ধতি:
টি ট্রি অয়েল:টি ট্রি অয়েল অ্যান্টিসেপ্টিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণাবলী রয়েছে। একটি কটন বাডে টি ট্রি অয়েল লাগিয়ে ব্রণের উপর প্রয়োগ করুন।
অ্যালোভেরা জেল:অ্যালোভেরা ত্বকের প্রদাহ কমাতে এবং ব্রণ নিরাময়ে সাহায্য করে। রাতে অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগিয়ে রাখতে পারেন।
মধু এবং দারুচিনি মাস্ক:1 টেবিল চামচ মধু এবং1/2 চা চামচ দারুচিনি মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে 15-20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। মধু অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং দারুচিনি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে।
গ্রিন টি:গ্রিন টি-তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি ঠান্ডা করে একটি কটন প্যাড দিয়ে মুখে লাগান অথবা গ্রিন টি পাতা দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করুন।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন:
সুষম খাদ্য গ্রহণ:চর্বিযুক্ত এবং মিষ্টি খাবার কম খান। তাজা ফল, সবজি, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন।
পর্যাপ্ত পানি পান:প্রতিদিন 8-10 গ্লাস পানি পান করুন যাতে ত্বক হাইড্রেটেড থাকে।
পর্যাপ্ত ঘুম:প্রতিদিন 7-8 ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন, কারণ ভালো ঘুম ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে।
স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট:স্ট্রেস কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম, মেডিটেশন বা যোগ ব্যায়াম করুন। স্ট্রেস ত্বকের ব্রণ বাড়াতে পারে।
অতিরিক্ত টিপস:মুখের বারবার স্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
হাতের ময়লা ও তেল ত্বকে লেগে ব্রণ বাড়াতে পারে, তাই মুখের স্পর্শ কমানোর চেষ্টা করুন।
প্রচুর পরিমাণে পরিষ্কার তোয়ালে ও বালিশের কভার ব্যবহার করুন:নিয়মিত পরিষ্কার তোয়ালে ও বালিশের কভার ব্যবহার করলে ত্বকে ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া কম জমে।
এই টিপসগুলো অনুসরণ করলে ব্রণযুক্ত ত্বক সুস্থ ও পরিষ্কার থাকবে এবং নতুন ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
এ. আর. মুক্তির আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;
comment url