সাইবার ক্রাইম কত প্রকার
সাইবার ক্রাইম বা সাইবার অপরাধ বর্তমান বিশ্বের একটি অন্যতম গুরুতর সমস্যা। ইন্টারনেট ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে সাইবার অপরাধের ধরন ও সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণত, সাইবার অপরাধকে কয়েকটি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
এই অপরাধগুলো ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, অর্থনৈতিক প্রতারণা, সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার, সাইবার বুলিং, এবং ম্যালওয়্যার আক্রমণের মাধ্যমে সংগঠিত হয়। ব্যক্তিগত তথ্য চুরি সাধারণত ফিশিং, হ্যাকিং, বা অন্য কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে করা হয়। অর্থনৈতিক প্রতারণার মধ্যে অনলাইন ব্যাংকিং প্রতারণা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি জালিয়াতি অন্যতম।
সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার এবং সাইবার বুলিং সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার নতুন বিপদ হিসেবে উঠে এসেছে। ম্যালওয়্যার আক্রমণ কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্ক সিস্টেম ধ্বংস করার লক্ষ্যে চালানো হয়। এসব সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। তাই সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইন প্রয়োগের গুরুত্ব অপরিসীম।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার
সাইবার ক্রাইম বর্তমান ডিজিটাল যুগে একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের একটি বিস্তৃত শ্রেণী। কিন্তু, সাইবার ক্রাইম কত প্রকার তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর বিভিন্ন রূপ বিভিন্ন প্রভাব ফেলতে পারে। নিম্নে আমরা সাইবার ক্রাইমের বিভিন্ন প্রকার ও তাদের বিশদ বিবরণ প্রদান করছি।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার: মূল প্রকারভেদ
1.হ্যাকিং (Hacking):-হ্যাকিং হল এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে অননুমোদিতভাবে একটি কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কে প্রবেশ করা হয়। এটি সাইবার ক্রাইমের একটি সাধারণ এবং ব্যাপকভাবে পরিচিত রূপ। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অপরাধীরা সংবেদনশীল তথ্য চুরি করতে পারে, সিস্টেমে ক্ষতি করতে পারে, অথবা শুধুমাত্র মজা করার জন্য এটি করতে পারে।
2.ফিশিং (Phishing):-ফিশিং হল একটি প্রতারণামূলক প্রক্রিয়া যেখানে প্রতারকরা ভুয়া ইমেইল বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে। এই ধরনের সাইবার ক্রাইমের উদ্দেশ্য হল ব্যবহারকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, পাসওয়ার্ড বা অন্যান্য সংবেদনশীল তথ্য চুরি করা।
3.ম্যালওয়্যার (Malware) আক্রমণ:-ম্যালওয়্যার হল ক্ষতিকারক সফটওয়্যার যা কম্পিউটার বা নেটওয়ার্কে ক্ষতি করার জন্য তৈরি করা হয়। এটি সাইবার ক্রাইমের একটি বড় অংশ এবং বিভিন্ন ধরণের হতে পারে, যেমন ভাইরাস, ওয়ার্ম, ট্রোজান হর্স এবং স্পাইওয়্যার।
4.র্যানসমওয়্যার (Ransomware):-র্যানসমওয়্যার হল একটি ম্যালওয়ারের ধরন যা কম্পিউটার বা ফাইলগুলি লক করে এবং মুক্তিপণ দাবি করে। আক্রান্ত ব্যবহারকারীকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে বলা হয় যাতে তারা তাদের ফাইলগুলি পুনরুদ্ধার করতে পারে।
5.ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অফ সার্ভিস (DDoS) আক্রমণ:-DDoS আক্রমণ হল এমন একটি আক্রমণ যেখানে একাধিক কম্পিউটার ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট সার্ভার বা নেটওয়ার্ককে অতিরিক্ত ট্র্যাফিক দিয়ে অচল করে দেওয়া হয়। এটি ওয়েবসাইট বা অনলাইন পরিষেবাগুলি বন্ধ করতে পারে।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার: অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ধরণ
1.আইডেন্টিটি থেফট (Identity Theft):-আইডেন্টিটি থেফট হল এমন একটি অপরাধ যেখানে কারো ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করা হয় এবং তা অপরাধমূলক কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। সাধারণত এটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ চুরি করতে বা বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করার জন্য করা হয়।
2.অনলাইন ফ্রড (Online Fraud):-অনলাইন ফ্রড হল ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংঘটিত বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা। এর মধ্যে রয়েছে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করা, পণ্য বা পরিষেবা বিক্রির নামে অর্থ চুরি করা, এবং অন্যান্য প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড।
3.স্প্যাম (Spam):-স্প্যাম হল অবাঞ্ছিত ইমেইল যা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হয়, যেমন বিজ্ঞাপন, প্রতারণা, বা ম্যালওয়্যার প্রেরণ। স্প্যাম ইমেইলগুলি সাধারণত বড় সংখ্যায় প্রেরিত হয় এবং ব্যবহারকারীদের জন্য বিরক্তিকর হতে পারে।
4.সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (Social Engineering):-সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং হল একটি প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড যেখানে অপরাধীরা মানসিক কৌশল ব্যবহার করে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে। এটি সাধারণত ফোন কল, ইমেইল, বা মুখোমুখি আলাপচারিতার মাধ্যমে করা হয়।
5.ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রাইম (Cryptocurrency Crime):-ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রাইম হল অপরাধ যেখানে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে বিটকয়েন বা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি, ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ হ্যাকিং, এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করে মানি লন্ডারিং।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার: অনলাইনে যৌন হয়রানি
1.অনলাইনে যৌন হয়রানি (Online Harassment):-অনলাইনে যৌন হয়রানি সাইবার ক্রাইমের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রকার। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয় অনলাইন স্টকিং, হুমকি, এবং অপমানজনক বার্তা প্রেরণ। এটি সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়া এবং মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনগুলির মাধ্যমে সংঘটিত হয়।
2.রিভেঞ্জ পর্ন (Revenge Porn):-রিভেঞ্জ পর্ন হল এমন একটি অপরাধ যেখানে কোন ব্যক্তির গোপনীয় ছবি বা ভিডিও অনলাইনে তাদের অনুমতি ছাড়াই শেয়ার করা হয়। এটি সাধারণত ব্যক্তিগত প্রতিশোধ বা ব্ল্যাকমেইলের উদ্দেশ্যে করা হয়।
3.চাইল্ড পর্নোগ্রাফি (Child Pornography):-চাইল্ড পর্নোগ্রাফি সাইবার ক্রাইমের একটি গুরুতর প্রকার। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয় শিশুদের যৌন ছবি বা ভিডিও তৈরি, শেয়ার করা, বা ধারণ করা। এটি একটি বড় আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং এটি সারা বিশ্বে কঠোরভাবে শাস্তিযোগ্য।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার: অর্থনৈতিক অপরাধ
1.ক্রেডিট কার্ড ফ্রড (Credit Card Fraud):-ক্রেডিট কার্ড ফ্রড হল এমন একটি সাইবার ক্রাইম যেখানে কার্ড ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি করা হয় এবং তা অর্থ চুরি করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি সাধারণত ফিশিং, স্কিমিং, বা ডেটা ব্রিচের মাধ্যমে করা হয়।
2.ই-কমার্স ফ্রড (E-commerce Fraud):-ই-কমার্স ফ্রড হল অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সংঘটিত প্রতারণা। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয় ভুয়া পণ্য বিক্রি, পেমেন্ট চুরি, এবং জাল ওয়েবসাইট তৈরি করা।
3.বিজনেস ইমেইল কম্প্রোমাইজ (BEC):-বিজনেস ইমেইল কম্প্রোমাইজ একটি ধরণের সাইবার ক্রাইম যেখানে ব্যবসায়িক ইমেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয় এবং অর্থ চুরি করা হয়। এটি সাধারণত ফিশিং ইমেইলের মাধ্যমে সংঘটিত হয়।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার: সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অপরাধ
1.প্রোপাগান্ডা ও ডিজইনফরমেশন (Propaganda and Disinformation):-প্রোপাগান্ডা ও ডিজইনফরমেশন হল এমন একটি সাইবার ক্রাইম যেখানে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয় জনমত প্রভাবিত করার জন্য। এটি সাধারণত রাজনৈতিক বা সামাজিক উদ্দেশ্যে করা হয়।
2.সাইবার টেররিজম (Cyber Terrorism):-সাইবার টেররিজম হল একটি ধরণের সাইবার ক্রাইম যেখানে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী ইন্টারনেট এবং কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে আক্রমণ করে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয় নেটওয়ার্ক ধ্বংস, ডেটা চুরি, এবং প্রচারণামূলক আক্রমণ।
3..সাইবার স্পাইং (Cyber Spying):-সাইবার স্পাইং হল এমন একটি অপরাধ যেখানে সরকার বা কর্পোরেশন গোপন তথ্য চুরি করে। এটি সাধারণত রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার: স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব
1.স্বাস্থ্যসেবা ডেটা চুরি (Healthcare Data Theft):-স্বাস্থ্যসেবা ডেটা চুরি হল একটি ধরণের সাইবার ক্রাইম যেখানে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ডেটা চুরি করা হয়। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয় রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য এবং মেডিক্যাল রেকর্ড চুরি।
2.ফার্মাসিউটিক্যাল ফ্রড (Pharmaceutical Fraud):-ফার্মাসিউটিক্যাল ফ্রড হল এমন একটি সাইবার ক্রাইম যেখানে ভুয়া ওষুধ তৈরি ও বিক্রি করা হয়। এটি সাধারণত অনলাইন ফার্মেসির মাধ্যমে করা হয়।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার: ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রভাব
1.সাইবার বুলিং (Cyber Bullying):-সাইবার বুলিং হল এমন একটি অপরাধ যেখানে ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কাউকে হুমকি, অপমান, বা হয়রানি করা হয়। এটি সাধারণত কিশোরদের মধ্যে দেখা যায়।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার: ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রভাব
সাইবার ক্রাইম বর্তমান ডিজিটাল যুগে এক বিশাল সমস্যার রূপ নিয়েছে। এটি ব্যক্তিগত এবং সামাজিক স্তরে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। এই প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করবো সাইবার ক্রাইম কত প্রকার এবং এর ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রভাব সম্পর্কে।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার তা জানার জন্য আমাদের বিভিন্ন ধরণের সাইবার ক্রাইমের বিশদ বিবরণে যেতে হবে। নিম্নে কিছু প্রধান ধরণের সাইবার ক্রাইম এবং তাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রভাব আলোচনা করা হলো:
1.হ্যাকিং (Hacking):-হ্যাকিং হল কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কে অননুমোদিত প্রবেশ। ব্যক্তিগত পর্যায়ে, এটি ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, আর্থিক ক্ষতি, এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সামাজিক স্তরে, এটি প্রতিষ্ঠান বা সরকারের সুরক্ষা ব্যবস্থা লঙ্ঘন করতে পারে, যা জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলে।
2.ফিশিং (Phishing):-
ফিশিং প্রতারণামূলক ইমেইল বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার একটি পদ্ধতি। ব্যক্তিগতভাবে, এটি অর্থ চুরি এবং পরিচয় চুরির কারণ হতে পারে। সামাজিকভাবে, এর ফলে বড় আকারের আর্থিক ক্ষতি এবং জনগণের ইন্টারনেট নিরাপত্তা সম্পর্কে অবিশ্বাস বাড়তে পারে।
3.ম্যালওয়্যার (Malware) আক্রমণ:-ম্যালওয়্যার হল ক্ষতিকারক সফটওয়্যার যা কম্পিউটার বা নেটওয়ার্কে ক্ষতি করে। এটি ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে এবং সিস্টেমকে অচল করে দিতে পারে। সামাজিক স্তরে, ম্যালওয়্যার আক্রমণ বড় প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সেবায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে, যা অর্থনৈতিক ও সামাজিক অস্থিতিশীলতার কারণ হতে পারে।
4.র্যানসমওয়্যার (Ransomware):-র্যানসমওয়্যার কম্পিউটার বা ফাইল লক করে এবং মুক্তিপণ দাবি করে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে, এটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হারানোর এবং আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। সামাজিকভাবে, র্যানসমওয়্যার আক্রমণ হাসপাতাল বা জরুরি সেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলি অচল করে দিতে পারে, যা মানব জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে।
5.ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অফ সার্ভিস (DDoS) আক্রমণ:-DDoS আক্রমণ একটি নির্দিষ্ট সার্ভার বা নেটওয়ার্ককে অতিরিক্ত ট্র্যাফিক দিয়ে অচল করে দেয়। ব্যক্তিগতভাবে, এটি ব্যবহারকারীদের অনলাইন সেবা থেকে বঞ্চিত করতে পারে। সামাজিক স্তরে, এটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট এবং অনলাইন পরিষেবাগুলির কার্যকারিতা বন্ধ করে দিতে পারে, যা অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার: ব্যক্তিগত প্রভাব
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার তা বোঝার পর আমরা এর ব্যক্তিগত প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করবো। বিভিন্ন ধরণের সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে ব্যক্তি কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
1.আর্থিক ক্ষতি:-সাইবার ক্রাইমের কারণে ব্যক্তিরা সরাসরি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। ক্রেডিট কার্ড ফ্রড, ব্যাংকিং তথ্য চুরি, এবং র্যানসমওয়্যার আক্রমণের ফলে অর্থ চুরি হতে পারে।
2.ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার:-সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে চুরি করা ব্যক্তিগত তথ্য প্রতারণা, পরিচয় চুরি, এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হতে পারে। এর ফলে ব্যক্তিরা মানসিক চাপ ও নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হতে পারে।
3.মানসিক স্বাস্থ্য:-সাইবার বুলিং, অনলাইন হয়রানি, এবং পরিচয় চুরির কারণে মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ভুক্তভোগীরা উদ্বেগ, বিষণ্নতা, এবং আত্মবিশ্বাসের অভাবের মতো মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার: সামাজিক প্রভাব
সাইবার ক্রাইমের সামাজিক প্রভাবও ব্যাপক হতে পারে। নিম্নে কিছু প্রধান সামাজিক প্রভাব উল্লেখ করা হলো:
1.অর্থনৈতিক প্রভাব:-সাইবার ক্রাইমের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলি বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। DDoS আক্রমণ, তথ্য চুরি, এবং ম্যালওয়্যার আক্রমণের ফলে কোম্পানির কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং বিশাল আর্থিক ক্ষতি হতে পারে।
2.সামাজিক নিরাপত্তা:-সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। হ্যাকিং এবং ম্যালওয়্যার আক্রমণের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং পরিষেবা লঙ্ঘন করা হতে পারে, যা সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা এবং জীবনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
3.গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া:-সাইবার ক্রাইম রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। প্রোপাগান্ডা এবং ডিজইনফরমেশনের মাধ্যমে জনমত প্রভাবিত করা এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা যেতে পারে।
4.গোপনীয়তা ও স্বাধীনতা:-সাইবার স্পাইং এবং তথ্য চুরির মাধ্যমে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন হতে পারে। এর ফলে ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।
সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে করণীয়
সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে সচেতনতা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। নিম্নে কিছু করণীয় পদক্ষেপ উল্লেখ করা হলো:
1.সুরক্ষিত পাসওয়ার্ড ব্যবহার:-জটিল এবং সুরক্ষিত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন এবং নিয়মিতভাবে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।
2.অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার:-একটি ভাল অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করুন এবং নিয়মিত আপডেট রাখুন।
3.ফিশিং ইমেইল থেকে সাবধান:-সন্দেহজনক ইমেইল থেকে সতর্ক থাকুন এবং কখনোই সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করবেন না।
4.নিয়মিত ব্যাকআপ নিন:-গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলির নিয়মিত ব্যাকআপ নিন যাতে র্যানসমওয়্যার আক্রমণের ক্ষেত্রে তথ্য রক্ষা পায়।
5.সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে সাবধান:-অপরিচিত ব্যক্তিদের সাথে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার সময় সতর্ক থাকুন এবং সন্দেহজনক আচরণ সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
সাইবার ক্রাইম কত প্রকার তা জানার জন্য আমাদের এই বিস্তৃত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে সাইবার ক্রাইমের ধরণ বিভিন্ন হতে পারে এবং এর প্রতিটি ধরণই ক্ষতিকারক হতে পারে। সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে আমাদের সকলের সচেতন হওয়া এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে আমরা নিজেদের এবং সমাজকে সুরক্ষিত রাখতে পারি।
এই আর্টিকেলটি সাইবার ক্রাইম কত প্রকার তা বোঝার জন্য এবং এর ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি মূল্যবান রিসোর্স হতে পারে। সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে আমাদের সকলকে আরও সচেতন হতে হবে এবং সাইবার সিকিউরিটি নিয়ম মেনে চলতে হবে।
এ. আর. মুক্তির আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;
comment url