এন্ড্রয়েড মোবাইল কত সালে আবিষ্কার হয়

এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের আবির্ভাব মোবাইল প্রযুক্তির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এন্ড্রয়েড একটি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম, যা গুগল দ্বারা উন্নীত এবং পরিচালিত হয়। এটি প্রথমবারের মতো ২০০৮ সালে বাজারে আসে এবং তখন থেকেই এটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে।


এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা উন্নতমানের স্মার্টফোন অভিজ্ঞতা পেতে শুরু করে, যা শুধুমাত্র কল করা এবং মেসেজ পাঠানোর সীমাবদ্ধতার বাইরে গিয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, অ্যাপস ডাউনলোড, গেম খেলা এবং বিভিন্ন ধরণের মিডিয়া কন্টেন্ট উপভোগ করার সুযোগ দেয়।

ভূমিকা:

এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের অগ্রগতির ফলে মোবাইল ফোন বাজারে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটে। এন্ড্রয়েডের ওপেন সোর্স প্রকৃতি এটি অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের থেকে আলাদা করে তুলেছে এবং ডেভেলপারদের জন্য এটি একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। এই অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা গুগল প্লে স্টোর থেকে লক্ষ লক্ষ অ্যাপস ডাউনলোড করতে পারে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক কাজকে সহজ করে দেয়।
এন্ড্রয়েড মোবাইলের আবিষ্কার এবং তার পরবর্তী উন্নয়ন মোবাইল প্রযুক্তির জগতে এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। এটি মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য উন্নতমানের অভিজ্ঞতা প্রদান করেছে এবং প্রতিদিনের জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে।

এন্ড্রয়েড মোবাইল কে আবিষ্কার করেন

অ্যান্ডি রুবিন এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠাতা এবং উদ্যোক্তা। তিনি প্রযুক্তি জগতে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব এবং এন্ড্রয়েডের মূল ধারণা এবং বিকাশের পেছনে তাঁর মূল অবদান রয়েছে। রুবিনের নেতৃত্বে এন্ড্রয়েড ইনকর্পোরেশন তৈরি করা হয়, যা মোবাইল ডিভাইসের জন্য একটি নতুন ধরনের অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে পরিকল্পিত হয়।
রিচ মাইনার (Rich Miner):রিচ মাইনারও এন্ড্রয়েড ইনকর্পোরেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রযুক্তি বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি পূর্বে ওয়াইল্ডফায়ার কমিউনিকেশন্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং গুগলে কাজ করার সময় এন্ড্রয়েড প্রকল্পে অবদান রাখেন।
নিক সিয়ার্স (Nick Sears):নিক সিয়ার্স এন্ড্রয়েড ইনকর্পোরেশনের আরেকজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং তিনি T-Mobile-এ কাজ করতেন। তাঁর টেলিকমিউনিকেশন অভিজ্ঞতা এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের বিকাশে সহায়ক হয়।
ক্রিস হোয়াইট (Chris White):ক্রিস হোয়াইট এন্ড্রয়েড ইনকর্পোরেশনের চতুর্থ সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং তিনি ডিজাইন এবং ইউজার ইন্টারফেস বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

২০০৫ সালে গুগল এন্ড্রয়েড ইনকর্পোরেশন অধিগ্রহণ করে এবং এর উন্নয়ন শুরু করে। গুগলের অধীনে, এন্ড্রয়েড একটি ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্ম হিসেবে রূপান্তরিত হয় এবং দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ২০০৮ সালে, এইচটিসি ড্রিম (HTC Dream) নামের প্রথম এন্ড্রয়েড চালিত মোবাইল ফোনটি বাজারে আসে, যা টিঅ্যান্ডটি জি ১ (T-Mobile G1) নামেও পরিচিত।

এন্ড্রয়েড মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমের আবিষ্কার এবং উন্নয়নে অ্যান্ডি রুবিন, রিচ মাইনার, নিক সিয়ার্স, এবং ক্রিস হোয়াইটের অবদান অনস্বীকার্য। তাঁদের প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ, এন্ড্রয়েড আজ বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমে পরিণত হয়েছে, যা কোটি কোটি ব্যবহারকারী এবং ডেভেলপারদের জীবনকে সহজতর এবং সমৃদ্ধ করেছে।

প্রথম এন্ড্রয়েড ফোন কোন কোম্পানি চালু করে

প্রথম এন্ড্রয়েড ফোন চালু করেছিল এইচটিসি (HTC) কোম্পানি। এই ফোনটির নাম ছিল "HTC Dream," তবে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে "T-Mobile G1" নামেও পরিচিত ছিল।
মুক্তির তারিখ: ২০০৮ সালের ২২ অক্টোবর
বৈশিষ্ট্যসমূহ:
অপারেটিং সিস্টেম: প্রথম এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম (Android 1.0)
ডিসপ্লে: ৩.২ ইঞ্চি টাচস্ক্রিন
কোয়ার্টি কীবোর্ড: স্লাইডিং কীবোর্ড, যা ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধাজনক ছিল
ক্যামেরা: ৩.১৫ মেগাপিক্সেল
অ্যাপ স্টোর: গুগল প্লে স্টোর (তৎকালীন অ্যান্ড্রয়েড মার্কেট)
অন্যান্য: ওয়াইফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস ইত্যাদি
এই ফোনটি এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের প্রথম বাণিজ্যিক মডেল ছিল এবং এটি মোবাইল ফোনের জগতে এক নতুন যুগের সূচনা করেছিল। ফোনটি তৎকালীন সময়ের মধ্যে একটি বড় পদক্ষেপ ছিল, কারণ এটি একটি ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্মে তৈরি করা হয়েছিল যা ডেভেলপারদের জন্য অ্যাপ্লিকেশন তৈরি এবং শেয়ার করা সহজ করে দেয়। HTC Dream (T-Mobile G1) এর মাধ্যমে এন্ড্রয়েড মোবাইলের জগতে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয় এবং পরবর্তী সময়ে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

বাংলাদেশে প্রথম এন্ড্রয়েড ফোন কত সালে আসে

বাংলাদেশে প্রথম এন্ড্রয়েড ফোন আসে ২০১০ সালের দিকে। এই সময়ে গুগলের এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম চালিত স্মার্টফোনগুলো বাজারে প্রবেশ করতে শুরু করে। প্রাথমিক পর্যায়ে এসব ফোন বেশ ব্যয়বহুল ছিল এবং শুধুমাত্র উচ্চ আয়ের ব্যক্তিরাই সেগুলো ক্রয় করতে পারতেন। তবে, সময়ের সাথে সাথে এন্ড্রয়েড ফোনের দাম কমতে শুরু করে এবং বিভিন্ন দামের মধ্যে উপলব্ধ হয়ে যায়, ফলে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

বাংলাদেশে এন্ড্রয়েড ফোনের আগমন এবং এর দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা মোবাইল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে করে মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে এক ধাপ অগ্রগতি ঘটে।

স্মার্টফোন প্রথম বাজারজাত করে কোন কোম্পানি

স্মার্টফোনের প্রথম বাজারজাত ফোন এইচটিসি (HTC) কোম্পানির দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের প্রথম বাজারজাত ফোন হিসেবে, HTC Dream (যা T-Mobile G1 নামেও পরিচিত) ২০০৮ সালে বাজারে প্রথম প্রকাশিত হয়। 
এই ফোনটি এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চালিত ছিল এবং এন্ড্রয়েড মোবাইল ডিভাইসের জন্য এক নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছিল। এই ফোনটি মোবাইল প্রযুক্তির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সূচনা করে। এটি ছিল স্মার্টফোনের জন্য গুগলের এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের বিকাশে প্রধান প্রযুক্তিগত প্রযুক্তি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
কমেন্ট করুন

এ. আর. মুক্তির আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;

comment url